বাংলালিংক কেন সবার থেকে পিছিয়ে?

বাংলালিংক

প্রায় ৩৬ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার নিয়ে বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম স্যালুলার সার্ভিস প্রোভাইডার কোম্পানি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ৩য় অবস্থানে থাকলেও একসময় বাংলালিংক ২য় স্যালুলার সার্ভিস প্রোভাইডার স্থান ধরে রেখেছিল। মার্কেটের অন্যান্য অপারেটরদের সাথে প্রতিযোগিতায় কোম্পানিটি প্রাইসিং ও ব্রান্ডিং এর মাধ্যমে ২য় অবস্থানে নিয়েযেতে পারলেও সেই অবস্থান তারা ধরে রাখতে পারেনি। একসময় টিভি বিজ্ঞাপন দিয়ে মাতিয়ে রাখা প্রতিষ্টানটির মিডিয়া প্রেজেন্ট কমে গেছে বেশ গুন। তবে কি হয়েছিল বাংলালিংকের? যে একসময় তরুণসমাজকে মাতিয়ে রাখা প্রতিষ্টানটি দিন দিন পিছিয়ে পরছে? 

বাংলালিংকের যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৯ সালে সেবা টেলিকম নামে। সেবা টেলিকম প্রাইভেট লিমিটেড (Sheba Telecom Pvt. লিমিতেদ) বাংলাদেশের লোকাল ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিসেস লিমিটেড (Integrated Services Limited) এবং মালোসিয়া ভিত্তিক টেকনোলজি রিসার্চ ইন্ডাস্ট্রিস (Technology Reacherch Industries) মধ্যকার একটি জয়েন্ট ভেঞ্জার হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সেই বছরে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৯ টি উপজেলায় টেলি কমিউনিকেশন সার্ভিসের লাইসেন্স পায়। এর পর বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ এবং টেলিকম বোর্ড থেকে ওয়ারলেস  টেলি কমিউনিকেশনের লাইসেন্স ইস্যু করা সুরু হয়।

১৯৯৬ সালে কোম্পানিটি স্যালুলার মোবাইল সার্ভিস এবং রেডিও টেলিফোন সার্ভিস দেওয়া লক্ষ্যে GSM লাইসেন্স সংগ্রহ করে। ওয়ারলেস লোকাল লুপ বা WLL Technology ব্যাবহার করে প্রতিষ্ঠানটি সেবা দিয়ে যেতে থাকে এবং বেশ পরিচিতি লাভ করতে থাকে। 

২০০৪ সালের জুলাই মাসে মিশরিয়া টেমলামাইট ORASCOM টেলিকম রিসার্স ইন্ডাস্ট্রিজ সম্পুর্ন শেয়ার ২৫ মিলিয়নের বিনিময় কিনে নেয়। সেই বছরের অক্টোবর মাসে ORASCOM ৬০ মিলিয়নের বিনিময় শেবা টেলকম কিনে নেয় এবং রি ব্রান্ডিং এর কাজ শুরু করে, সেই বছর শেবা টেলিকমের সাবস্ক্রাইবার বা গ্রাহক ছিলো মাত্র ৫৯ হাজার! ২০০৫ সালের ১০ এ ফেব্রুয়ারি ORASCOM, সেবা টেলিকমকে রিব্রান্ড করে বাংলালিংক নাম দেয়, যা ছিলো কোম্পানিটির জন্য একটি জয়নিং পয়েন্ট, কারন সেই বছরের শেষের দিকে কোম্পানিটির মোট ব্যবহার সংখ্যা দারিয়ে যায় ১ মিলিয়নের বেশি। 


২০০৬ সালে বাংলালিংক প্রথম Postpaid ও Prepaid এ ইনকামিং ফ্রী কলের সুবিধা দিতে থাকে এবং বেশ ভালো সারা পেতে থাকে। ফলে সেই বছরের শেষে ইউজার সংখ্যা ২৫৭ শতাংশ বেড়ে দারায় ৩.৬৪ মিলিয়ন। শুরু থেকেই বাংলালিংক অন্যান্য অপারেটর থেকে কম কল রেট অফার করছিলো। এর পাশাপাশি ২০০৬ সালে বাংলালিংক তাদের  দেশ প্যাকেজটি লঞ্চ করে! প্যকেজটির প্রমোশনের জন্য কোম্পানিটি বেশ কয়েকটি এ্যাডভার্টাইজমেন্ট লঞ্চ করে। সেই সময় বাংলালিংকের অ্যাডভারটাইজিং গুলো বেশ সুন্দর ও আকর্ষনীয় ছিলো যা তরুণ ইউজারদের আকৃষ্ট করতে বেশ সফল হয়েছিল। যার ফলে ২০০৭ সালের শেষের দিকে বাংলালিংক দেশের অন্যন্য অপারেটরদের পেছনে ফেলে সেকেন্ড লার্জেস মার্কেট প্লেয়ার হয়ে যায়। তখন মার্কেট লেডার ছিলো গ্রামিনফোন বাংলালিংক তখন গ্রামিন থেকে কমে কল রেট অফার করছিল বিদায় ইউজাররা প্রতিষ্টানটির প্রতি আরো বেশি আকৃষ্ট হয়েছে।

২০০৮ সালের মার্চ মাসে সেবা টেলিকম প্রাইভেট লিমিটেড (Sheba Telecom (PVT) Limited) নাম পরিবর্তন করে ORASCOM Telecom Bangladesh Limited রাখা হয়। সেই বছরের জুলাই মাসের মদজ্যে কোম্পানিটির ইউজার সংখ্যা দারায় ১০ মিলিয়নের বেশি, সেই বছরের ২০০৮-০৯ ফেসক্যালিয়ারে প্রথম কুয়াটারে বাংলালিংকের রেভিনিউ ছিলো ১৩২ মিলিয়ন ডলার যা আগের বছরের অইসময়ের ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে কোম্পানিটির মোট গ্রাহক ছিলো ১০.৯০ মিলিয়ন। এইদিকে ২১ মে ২০০৯ সালে ডেইলি স্টারের একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায় ৩য় স্থানে থাকা মোবাইল অপারেটর একটেলের সাথে বাংলালিংকের মার্জ হবার সম্ভবনা তৈরি হলেও পরবর্তীতে মার্জটি সফল হয়নি। সেই বছর ২৬.৪৫% মার্কেট শেয়ার নিয়ে বাংলালিংক ছিলো দেশের ২য় বৃহত্তম নেটওয়ার্ক।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের শীর্ষে থাকা ২ মোবাইল ফোন অপারেটিং কোম্পানি, বাংলালিংক ও গ্রামিন গ্রাম অঞ্চলে নেটওয়ার্ক টাওয়ার বসাবে পরিকল্পনা করে। 


আরো পড়ুনঃ
  1. রবি ইতিহাস

Next Post Previous Post