সাইবার নিরাপত্তা আইন - সাইবার অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

সাইবার অপরাধ দমনে বিভিন্ন দেশেই আইন চালু আছে। আমাদের দেশে ২০০৬ সালে প্রণীত 'তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ এর ৫৭(১) ধারামতে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করে যা মিথ্যা ও অশ্লীল, যার দ্বারা কারও মানহানি ঘটে বা ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়, আর এ ধরনের তথ্যগুলোর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হলে অনধিক দশ বছর কারাদন্ড এবং অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দন্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

সাইবার সিকিউরিটি বাংলাদেশ

এছাড়া, পর্ণগ্রাফি আইন-২০১২-তে বর্ণিত আছে, কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট বা ওয়েবসাইট বা মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে পর্ণগ্রাফি সরবরাহ করলে সর্বোচ্চ 5 বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং 2 লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদন্ডে দণ্ডিত হবেন।

সাইবার নিরাপত্তা আইন

সর্বশেষ 2018 সালে আমাদের দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণীত হয়, যার আংশিক উল্লেখ করা হলো:

- ১. কোনো ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোয় বেআইনি প্রবেশ করে ক্ষতিসাধন, বিনষ্ট বা অকার্যকরের চেষ্টা কিংবা কম্পিউটার সিস্টেম, নেটওয়ার্ক বা প্রোগ্রাম ধ্বংস/পরিবর্তন বা অকার্যকর করতে পারবেন না।

- ২. ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশ করতে পারবেন না, সেখান থেকে কোনো তথ্য বা উদ্ধৃতাংশ বা উপাত্তের অনুলিপি সংগ্রহ করতে পারবেন না।

- ৩. ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে কারো সাথে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতারণা, জালিয়াতি বা ছদ্মবেশ ধারন করতে পারবেন না।

- ৪. ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে প্রচার বা অপপ্রচার কিংবা এতে মদদ দিতে পারবেন না।

- ৫. রাষ্ট্রের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য অপপ্রচার বা কার্যকলাপ, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা জাতিগত ঘৃণা-উস্কানি বা বিভেদ/বিদ্বেষ সৃষ্টি করে কিংবা সামাজিকভাবে বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয় এরূপ কোনো কার্যক্রম ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে করা যাবে না।

- ৬. ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি নষ্ট, অপমান বা অপদস্থ করা কিংবা ভয়ভীতি বা হুমকি প্রদর্শন করা যাবে না।

- ৭. ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ব্যাংক, বীমা ইত্যাদি আর্থিক প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকারি, আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে আর্থিক ক্ষতি বা তছরুপ কিংবা অত্যন্ত গোপনীয় তথ্য চুরি, তথ্য পাচার করা যাবে না।

ডিজিটাল আইনের আওতায় উল্লিখিত কৃত অপরাধের জন্য বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি এবং আর্থিক দণ্ড প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে।

তাই আমাদের জীবনের অন্যান্য প্রতিটি সেক্টরের ন্যায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিবেক, বুদ্ধি ও বিবেচনাকে নৈতিকতার মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহার করে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিসহ সবধরনের অপরাধমূলক কাজের প্রবণতা হতে পরিত্রাণ পেতে পারি।

আরো পড়ুন

সাইবার সিকিউরিটি কি | ডিজিটাল প্রযুক্তির রক্ষণায়ন

Next Post Previous Post