স্বর্ণের দাম এত বেশি কেন? স্বর্ণ এত দামি কেন?

গোল্ড বা স্বর্ণ প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের সম্পদ, অলংকার এবং বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ব্যাবহৃত হয়ে আসা একটি মুল্যবান ধাতু! সময়ের সাথে সাথে গোল্ডের ব্যাবহারে নানান পরিবর্তন এসেছে। বর্তমানে গোল্ড অলংকারের পাশাপাশি ব্যাংকিং ও ফাইনান্স এমনকি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসেও ব্যাবহার করা হচ্ছে। ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী ৪ হাজার টনের বেশি গোল্ডের ডিমান্ডের বিপরীতে সাপ্লায়ের পরিমাণ ছিলো প্রায় ৪ হাজার ৭০০ টন। কিন্তু ডিমান্ডের তুলনায় সাপ্লায়ের পরিমাণ বেশি থাকা সত্তেও, গোল্ড প্রাচীনকাল থেকেই অনেক এক্সপেন্সিভ একটি মেটাল। বর্তমানে ১ গ্রাম গোল্ডের দাম প্রায় 60$ ডলার, অর্থাৎ প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম দারায় প্রায় 670$। 

অন্যদিকে বাংলাদেশে ২২ কেরেটের প্রতি ১ গ্রাম গোল্ডের দাম প্রায় ৭৫০০/- টাকা। অর্থাৎ প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম, প্রায় ৯০,০০০/- (নব্বই হাজার টাকা)। সে তুলনায় ২২ কেরেটের প্রতি ভরি রুপার দাম মাত্র ১৫০০ টাকা (এক হাজার পাচশত টাকা) কিন্তু আদোতে স্বর্ণের দাম কেন এত বেশি? 

স্বর্ণের দাম এত বেশি কেন?

প্রাচীন মিশরীয়রা গোল্ডকে দেবতার শরীরের অংশ হিসেবে বিশ্বাস করত! আবার ESTEC এর মতে ইশ্বরের ঘাম থেকে গোল্ডের উৎপত্তি হয়েছিল। গোল্ড নিয়ে যুগে যুগে বিভিন্ন সভ্যতায় ভিন্ন মতে প্রচলন থাকলেও, আধুনিক বিজ্ঞান অনুসারে অন্যান্য হেভি মেটাল গুলোর মত মহাকাশে নিউক্লিয়ার ফিউশনের মাধ্যমেই তৈরি হয়েছিলো। যা পৃথিবী সৃষ্টির প্রায় ২০ কোটি বছর পর, উল্কার সাথে ভূপৃষ্ঠে পৌছায়। পরবর্তীতে পৃথিবীর ফর্মেশনের সময় এই গোল্ড, অন্যান্য মেটাল যেমন- লোহা, এ্যালুমিনিয়াম, কোপার এবং রুপার সাথে সাথে ভূপৃষ্ঠের অভ্যান্তরে পৌছে যায়। খ্রিষ্ট পুর্ব ২৪৫০ সালে প্রাচীন মিশরে (Egypt) প্রথম গোল্ড পাওয়া যায়। এবং ধাতুটির উজ্জ্বল রঙের কারণে, মিশরীয়দের কাছে তখন থেকে মুল্যবান একটু ধাতু হিসেবে ব্যাবসা বানিজ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন অর্নামেন্ট তৈরির কাজেও গোল্ড ব্যাবহার করা হতো।

World Gold Counsil এর মতে প্রাচীনকাল হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত ভুগর্ভ থেকে উত্তলিত গোল্ডের পরিমাণ ২ লক্ষ টনেরও বেশি, যা বিশ্বের মোট গোল্ডের ৩ ভাগের ২ ভাগ। বর্তমানে চীন, রাশিয়া, কানাডা, ইউএসএ, খানা এবং মেক্সিকোতে সব চেয়ে বেশি স্বর্ণ প্রডিউস করা হয়। ২০২১ সালে ৩৩২ টোন বা বিশ্বের মোট উৎপাদনের ৯% স্বর্ণ উতপাদন করে চীন বিশ্বের সর্ববৃহৎ গোল্ড প্রডিউসার ছিলো। 

চীন ছাড়াও রাশিয়া ৩৩০ টন,, অস্ট্রেলিয়া প্রায় ৩১৫ টন, এবং কেনাডা ১৯২ টন গোল্ড উৎপাদন করে। উৎপাদন দিক থেকে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ  অবস্থানে রয়েছে। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ প্রার্থনা করার জন্য বানানো মুর্তি থেকে শুরু করে জুয়েলারি হিসেবে গোল্ডের ব্যাবহার করে এসেছে। এরপর ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে গোল্ডের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে কাগজের নোটের ব্যাবহার বাড়তে থাকলে, একটা সময় গোল্ড বিশ্বের কারেন্সি গুলোর ভিত্তি হয়ে ওঠে। যাকে মূলত গোল্ড স্টান্ডার্ড বলা হয়ে থাকে। 



Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.